
আন্তর্জাতিক ডেস্ক | ১৪ এপ্রিল ২০২৫
রাশিয়ার বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধে ইউক্রেনের বাস্তবতা সরেজমিনে দেখার আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। এবার তাঁর আমন্ত্রণ পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুদ্ধের প্রেক্ষাপট বুঝতে ও “বাস্তবতা নিজ চোখে দেখার” জন্য ট্রাম্পকে ইউক্রেন সফরের আহ্বান জানানো হয়েছে।
জেলেনস্কির সরাসরি বার্তা
এক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি বলেন:
“আমি চাই, মি. ট্রাম্প নিজে এসে দেখুন—এই যুদ্ধ কতটা নির্মম, কতটা বাস্তব। এটা কোনো রাজনৈতিক বিতর্ক নয়, এটা আমাদের অস্তিত্বের লড়াই।”
তিনি আরও বলেন, যারা ইউক্রেনের যুদ্ধকে কেবল পশ্চিমা ষড়যন্ত্র মনে করেন কিংবা “শান্তিচুক্তির” কথায় যুদ্ধ থামাতে চান, তারা যুদ্ধক্ষেত্র দেখলে বুঝবেন বাস্তবতা কতটা নির্মম।
ট্রাম্পের অবস্থান
ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০২৪ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নেন এবং এখনো একজন প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা হিসেবে সক্রিয় রয়েছেন।
তিনি একাধিকবার দাবি করেছেন,
“আমার হলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইউক্রেন যুদ্ধ থেমে যেত।”
তাঁর এই বক্তব্য নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের কূটনৈতিক মহলে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। জেলেনস্কি মনে করেন, ট্রাম্প যদি সত্যিই শান্তির সমাধান চান, তবে যুদ্ধক্ষেত্রে এসে বাস্তব পরিস্থিতি বোঝা জরুরি।
সফরের রাজনৈতিক গুরুত্ব
বিশ্লেষকদের মতে, জেলেনস্কির এই আমন্ত্রণ কেবল কূটনৈতিক নয়, এটি একটি চাপ তৈরির কৌশল। ইউক্রেন বর্তমানে পশ্চিমা সহায়তার ওপর নির্ভরশীল, বিশেষ করে মার্কিন কংগ্রেসে ইউক্রেন সহায়তা নিয়ে বিতর্ক চলছে।
ট্রাম্পের সফর হলে তা এই বিতর্কে নতুন মাত্রা যোগ করবে।
কিয়েভভিত্তিক রাজনৈতিক বিশ্লেষক ইলিয়া গ্রাসচেঙ্কো বলেন:
“জেলেনস্কি জানেন, ট্রাম্প এখনো আমেরিকান জনমতকে প্রভাবিত করতে পারেন। তিনি যদি যুদ্ধক্ষেত্রের বাস্তবতা উপলব্ধি করেন, তাহলে হয়তো তাঁর অবস্থান নমনীয় হতে পারে।”
হোয়াইট হাউসের প্রতিক্রিয়া
যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসন এই আমন্ত্রণ নিয়ে সরাসরি কোনো মন্তব্য করেনি। তবে ট্রাম্পপন্থী রিপাবলিকান নেতাদের কেউ কেউ বিষয়টিকে “রাজনৈতিক নাটক” বলে অভিহিত করেছেন।
ট্রাম্প যাবেন কি?
এখন পর্যন্ত ডোনাল্ড ট্রাম্প এই আমন্ত্রণের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। তবে তাঁর এক মুখপাত্র জানিয়েছেন,
“মি. ট্রাম্প ইউক্রেন সংকট সম্পর্কে সচেতন। তবে তিনি কোনো সফরসূচি ঠিক করেননি।”
উপসংহার
ইউক্রেন যুদ্ধের তৃতীয় বর্ষে পা দিয়েছে। এ সময়ে এই সফরের আমন্ত্রণ কেবল ব্যক্তিগত নয় এটি এক কূটনৈতিক বার্তা, যা বিশ্ববাসীকে জানায়:
“এই যুদ্ধ আসল, এই যুদ্ধ এখনও চলছে, এবং এটি বন্ধ করার দায়িত্ব শুধু ইউক্রেনের নয় বিশ্বের সকল বিবেকবান নেতার।“