ঢাকায় আসছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব: কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদারে আশা

প্রতিবেদক ঢাকা, ১৫ এপ্রিল ২০২৫

দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক পুনরুজ্জীবনের লক্ষ্যে আগামীকাল (১৬ এপ্রিল) ঢাকায় সফরে আসছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব সাইরাস সাজ্জাদ কায়ানি। দুই দিনের এই সফরে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও আঞ্চলিক ইস্যুতে উচ্চ পর্যায়ের আলোচনার সম্ভাবনা রয়েছে।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ সফর দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নে একটি ‘গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ’। সফরের সময় সাইরাস সাজ্জাদ কায়ানি বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, “পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিবের এই সফর দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ। এটি দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকা সরাসরি আলোচনার পথ পুনরায় উন্মুক্ত করতে সহায়ক হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।”

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দক্ষিণ এশিয়ায় জিও-পলিটিকাল পরিস্থিতি এবং সাম্প্রতিক বৈশ্বিক ঘটনাবলি এই সফরকে আরও গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে। বিশেষ করে সার্ক এবং ওআইসির মতো আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কার্যক্রমে দুই দেশের সক্রিয় অংশগ্রহণ নতুন মাত্রা পেতে পারে।

আলোচনার সম্ভাব্য বিষয়বস্তু

সফরের সময় যেসব বিষয় আলোচনা হতে পারে তার মধ্যে রয়েছে:

  • দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ প্রসার
  • শিক্ষা ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রে বিনিময় কর্মসূচি
  • আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও সন্ত্রাসবিরোধী সহযোগিতা
  • জলবায়ু পরিবর্তন ও অভিবাসন ইস্যুতে সমন্বিত পদক্ষেপ
  • রোহিঙ্গা সংকটসহ আঞ্চলিক মানবিক ইস্যু

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে, কায়ানির সফরের সময় একটি সমঝোতা স্মারক (MoU) সই হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে, যা ভবিষ্যতে দুই দেশের মধ্যে যৌথ কর্মসূচি বাস্তবায়নে সহায়ক হবে।

পূর্বপ্রেক্ষাপট প্রাসঙ্গিকতা

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের পর এই প্রথম পাকিস্তানের কোনো শীর্ষ পর্যায়ের কূটনৈতিক প্রতিনিধির বাংলাদেশ সফর হতে যাচ্ছে। বিগত বছরগুলোতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বেশ খানিকটা শীতল ছিল। তবে সাম্প্রতিক সময়ে উভয় দেশই সম্পর্ক উন্নয়নে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এ সফরকে তাই একটি ‘পজিটিভ ডিপ্লোম্যাটিক সিগন্যাল’ হিসেবে দেখছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকেরা।

সংবাদ সম্মেলন সফরপরবর্তী দিকনির্দেশনা

সফর শেষে ১৭ এপ্রিল ঢাকায় এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেবেন দুই দেশের পররাষ্ট্রসচিব। সেখানে আলোচনা ও চুক্তিসমূহের সারাংশ তুলে ধরা হবে।

বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, এ সফর যদি সফল হয়, তাহলে ভবিষ্যতে প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ের সফরের পথও সুগম হতে পারে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top