
খেলা ডেস্ক:
দলটা ছিল জিম্বাবুয়ে। ক্রিকেট বিশ্বে অন্যতম দুর্বল ও পরাজিত দল হিসেবেই যাদের নাম উঠে আসে প্রায়ই। অথচ সেই দলের বিপক্ষেও যে এমন বিব্রতকর পারফরম্যান্স দিতে পারে বাংলাদেশ—তা হয়তো অনেকেই ভাবেননি। হারের ধাক্কায় চাপে পড়েছে পুরো দল, বিশেষ করে প্রশ্নের মুখে পড়েছেন অভিজ্ঞরা—নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুশফিকুর রহিম।
অপ্রত্যাশিত ব্যাটিং বিপর্যয়
সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ দল মাত্র ১৪১ রানে অলআউট হয়ে যায়, যেখানে উইকেট ছিল ব্যাটিং সহায়ক। শুরুতেই তামিম ইকবাল ও লিটন দাসের ব্যর্থতা দলকে বিপদে ফেলে দেয়। এরপর যে আশার চোখে তাকানো হয়েছিল শান্ত ও মুশফিকের দিকে, তারাও ব্যর্থ।
নাজমুল হোসেন শান্ত ১৩ রান করে বোল্ড হন, আর মুশফিক করেন মাত্র ৯ রান, ধৈর্যহীন এক শট খেলে।
ফলাফল? ব্যাটিং লাইনআপ ধসে পড়ে একেবারে নিচের সারিতে।
ক্রিকেট বিশ্লেষক আতহার আলী খান বলেন, “জিম্বাবুয়ের মতো দলের বিপক্ষে ব্যাটিংয়ে এতটা ভঙ্গুরতা অজুহাত দিয়ে ঢাকতে গেলে সেটা দলের ভবিষ্যতের জন্য ভয়াবহ হবে।“
নেতৃত্বের প্রশ্নে শান্ত
নাজমুল হোসেন শান্ত এখন বাংলাদেশ দলের নিয়মিত নেতৃত্বে থাকা একজন মুখ। কিন্তু নেতৃত্বের চাপ কি পারফরম্যান্সে প্রভাব ফেলছে? সাম্প্রতিক সময়ে তার ব্যাটিং গড় নিম্নমুখী, এবং মাঠে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা দেখা গেছে।
একজন সাবেক খেলোয়াড় বলেন, “নেতৃত্ব নিতে হলে আগে নিজেকে প্রমাণ করতে হয়। শান্ত সেই পরীক্ষায় এখনো উত্তীর্ণ নন।“
মুশফিকের ধারাবাহিকতা নেই
দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের নির্ভরযোগ্য মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম। কিন্তু সাম্প্রতিক সিরিজগুলোতে তার ইনিংস গড় অসন্তোষজনক। এক ম্যাচ ভালো তো পরের তিন ম্যাচে নির্বাক। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, এই বয়সে ও অভিজ্ঞতায় মুশফিক কি এখনো দলের জন্য প্রয়োজনীয়?
তবে অনেকে এটাও বলছেন, “এক–দুই ইনিংসে বিচার করলে হবে না, তবে ধারাবাহিকতার অভাব নিয়ে কথা তোলা যেতেই পারে।“
টিম ম্যানেজমেন্টের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, টিম ম্যানেজমেন্টও এই ব্যর্থতায় কম দায়ী নয়। একই ব্যাটিং লাইনআপ, রক্ষণশীল পরিকল্পনা, খেলোয়াড়দের আত্মবিশ্বাসে ঘাটতি—সব মিলিয়ে একটা নেতিবাচক আবহ তৈরি হয়েছে।
সমর্থকদের হতাশা ও ক্ষোভ
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইতোমধ্যেই ক্ষোভ ঝাড়ছেন সমর্থকরা। “জিম্বাবুয়ের কাছে যদি হারতে হয়, তাহলে বড় দলগুলোর সামনে কী হবে?”—এই প্রশ্ন এখন ঘুরে বেড়াচ্ছে প্রতিটি ক্রিকেটপ্রেমীর মনে।
শেষ কথা
বাংলাদেশের মতো টেস্ট খেলুড়ে দেশের জন্য এমন পারফরম্যান্স শুধু হতাশাজনক নয়, লজ্জাজনকও বটে। নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুশফিকুর রহিমের মতো অভিজ্ঞদের কাছ থেকে প্রত্যাশা ছিল নেতৃত্ব ও লড়াই দু’টোই। কিন্তু মাঠে দেখা গেল একেবারে ভিন্ন চিত্র।